Breaking






Thursday, July 7, 2022

শিশুশ্রমিক কারা ? ভারতে শিশুশ্রমিক সংখ্যা বৃদ্ধির কারণ গুলি লেখো।

শিশুশ্রমিক কারা ? ভারতে শিশুশ্রমিক সংখ্যা বৃদ্ধির কারণ গুলি লেখো।

শিশুশ্রমিক কারা ? ভারতে শিশুশ্রমিক সংখ্যা বৃদ্ধির কারণ গুলি লেখো।
শিশুশ্রমিক কারা ? ভারতে শিশুশ্রমিক সংখ্যা বৃদ্ধির কারণ গুলি লেখো।
✍️ কলম 
সুপ্রিয় বন্ধুরা,
আজকের এই পোস্টে শিশুশ্রমিক কাদের বলা হয় ? এবং ভারতে শিশুশ্রমিকের সংখ্যা বৃদ্ধির কারণ গুলি নিয়ে আলোচনা করলাম। নীচে খুব সুন্দরভাবে এই নোটসটি সম্পর্কে আলোচনা করা আছে, সুতরাং দেরি না করে ভালো করে নোটসটি দেখে নাও।

■ শিশুশ্রমিকঃ
কারখানা আইন অনুযায়ী ১৪ বছরের কম বয়স্ক শিশু যারা কৃষি, শিল্পকারখানা ,খনি, হোটেল বা রেস্তোরাঁ তথা যে কোনো শ্রম ক্ষেত্রে পারিশ্রমিকের বিনিময়ে কর্ম সম্পাদনে যুক্ত, তারাই হল শিশুশ্রমিক। তারা অর্থের বিনিময়ে যে শ্রম প্রদান করেছে তাহাই হলো শিশুশ্রম, যা সম্পাদনের ফলে তাদের শারীরিক, মানসিক এবং সামাজিক বিকাশ বাধাপ্রাপ্ত হয়।

■ ভারতে শিশুশ্রমিক সংখ্যা বৃদ্ধির কারণ গুলি হলঃ
দেশে শিশুশ্রমিকের সংখ্যা বৃদ্ধির কারণ সম্পর্কে বিভিন্ন মনস্তাত্ত্বিক ও সমাজতাত্ত্বিক অনুশীলন সূত্রে প্রাপ্ত তথ্য সমূহের ভিত্তিতে শিশুশ্রমিকের সংখ্যা বৃদ্ধির কারণগুলিকে নিম্নরূপে উপস্থাপন করা যেতে পারে - 

  • দারিদ্রতাঃ
ILO রিপোর্ট অনুযায়ী ভারতে শিশুশ্রমিকের হার বৃদ্ধির অন্যতম কারণ হল দারিদ্রতা এবং ইহা মূলত পারিবারিক দারিদ্রতা হিসাবে নির্দেশিত। পারিবারিক অভাব অনটনের পাশাপাশি সদস্যদের সংখ্যাধক্য এবং বেকারত্ব মূলক পরিস্থিতি শিশুদের ওপর চাপ বৃদ্ধি করছে।

  • পারিবারিক বিপর্যয়ঃ
পরিবারের উপার্জনশীল সদস্যের শারীরিক দুর্বলতা,বিকারগ্রস্থতা,অকালমৃত্যু এমনকি পারিবারিক বিপর্যয়ের মত পরিস্থিতিগুলিতে পারিবারিক সদস্যদেরকে আর্থিক সহযোগিতার জন্য শিশুরা কোন কর্মক্ষেত্রে কাজ করতে বাধ্য হয়।

  • অভিভাবকদের অজ্ঞতাঃ
বহু অশিক্ষিত এবং অজ্ঞ পিতামাতারা তাদের শিশুদেরকে উপার্জনের একক হিসাবে গণ্য করার ফলে শিশুশ্রমিকের সৃষ্টি ও সংখ্যা বৃদ্ধি পাচ্ছে।

  • অর্থের প্রতি শিশুদের মোহগ্রস্থতাঃ
বিশেষত নিম্নবর্গীয় শিশু,যাদের মধ্যে লেখাপড়ায় অমনযোগীতার সাথে সাথে বিদ্রোহী মনোভাব, অন্যদিকে যে কোন পথে অর্থ উপার্জনের মোহগ্রস্থতা তাদেরকে শিশুশ্রমে নিযুক্ত হতে বাধ্য করে।

  • শিক্ষা ব্যবস্থার দুর্বলতাঃ
প্রথাগত শিক্ষা শিশুকে নিশ্চিতভাবে কর্মমুখী করে তুলতে পারছেনা,আবার পাঠক্রম এবং পাঠদান পদ্ধতি কোনটিই তাদের কাছে অকার্যনীয় না হয়ে ওঠার কারণে মূলত নিম্নবর্গীয় পরিবারের শিশুরা কর্মক্ষেত্রে যুক্ত হওয়াকেই বাঞ্চনীয় বলে মনে করে।

  • নিয়োগকর্তাদের স্বার্থন্ষেষী মনোভাবঃ
লোভী এবং স্বার্থন্ষেষী নিয়োগকর্তারা নিজেদের স্বাথেই শিশুশ্রমকে মূলধন হিসাবে গণ্য করে শিশুদেরকে কর্মক্ষেত্রে যথেচ্ছভাবে নিয়োগ করছে। অবশ্য তাদের যুক্তি হল,দারিদ্র এবং পরিবারহীন শিশুরা কাজের সাথে নিযুক্ত থাকলে তারা অনাহার থেকে বাঁচবে এবং অপরাধমূলক ক্রিয়াকর্ম সম্পাদনের থেকে দূরে থাকবে।

  • জনসংখ্যা বৃদ্ধিঃ
দেশে জনসংখ্যা বৃদ্ধির ধারাবাহিকতা শিশুশ্রম বৃদ্ধি এবং শিশুশ্রমিকের সংখ্যা বৃদ্ধিকে প্রভাবিত করে।

  • শিশুশ্রম নির্ভর শিল্পঃ
কিছু কিছু শিল্প বড়দের তুলনায় শিশুদের শ্রমের উপর নির্ভর করে গড়ে ওঠে এবং বিদেশে সেই সকল শিল্পজাত ব্যাপক বাজার বর্তমান। সেই সমস্ত শিল্পের মালিকেরা অল্প মজুরিতে শিশুশ্রমিক নিয়োগ করে ব্যাপক মুনাফা অর্জন করে থাকে। এই প্রসঙ্গে উত্তরপ্রদেশের  কার্পেট শিল্পের দৃষ্টান্ত তুলে ধরা যেতে পারে।

  • সামাজিক দুর্বলতাঃ
সামাজিক নিরাপত্তাহীনতা, ভোগ্য সামগ্রীর প্রতি আকর্ষণ এবং অল্প বয়সে রোজকারের মনোবৃত্তি গড়ে তোলার শিশুদেরকে শ্রমক্ষেত্রে নিযুক্ত হতে প্রভাবিত করে।

  • রাজনৈতিক ত্রুটি-বিচ্যুতিঃ
ভারতে গণতন্ত্র এবং সমাজতন্তের মোটপ মুলবোধগুলির প্রতি দৃষ্টি নিক্ষেপ  করা হলেও রাজনৈতিক স্বার্থে বৈষম্যভিত্তিক আর্থসামাজিক কাঠামো ধরে রেখে পরোক্ষভাবে শিশুশ্রমিকের সংখ্যা বৃদ্ধিকে প্রভাবিত করছে।

  • সরকারি আইন ও প্রকল্প বাস্তবায়নের সীমাবদ্ধতাঃ
একশ্রেণীর অভিভাবক শিশুশ্রম নিষিদ্ধকরণ-বিষয়ক আইনসমূহের বিরোধিতা করে শিশুদের কাছ থেকে আর্থিক সাহায্য গ্রহণে প্রত্যাশী, অন্যদিকে শিশুশ্রম বিরোধী সরকারি প্রকল্প সমূহের বাস্তবায়নের সুনির্দিষ্ট কর্মসূচির অভাব শিশুশ্রম প্রথা-দমনের  পরিবর্তে পরোক্ষভাবে টিকিয়ে রাখার সাহায্য করছে।

পরিশেষে বলা যায় যে, ভারতে শ্রমিকের সংখ্যা বৃদ্ধিতে বৈচিত্র্যপূর্ণ কারণীকে উপদানসমূহের প্রভাব থাকলেও অর্থনৈতিক দুর্বলতাকেই অন্যতম কারণ হিসাবে দায়ী করা যেতে পারে।

No comments:

Post a Comment