Breaking






Friday, July 8, 2022

ভারতে জনসংখ্যা বৃদ্ধির কারণগুলি আলোচনা করো।

ভারতে জনসংখ্যা বৃদ্ধির কারণগুলি আলোচনা করো।

ভারতে জনসংখ্যা বৃদ্ধির কারণগুলি আলোচনা করো।
ভারতে জনসংখ্যা বৃদ্ধির কারণগুলি আলোচনা করো।
✍️ কলম 
সুপ্রিয় বন্ধুরা,
আজকের পোস্টে ভারতে জনসংখ্যা বৃদ্ধির কারণগুলি আলোচনা করলাম। নীচে খুব সুন্দরভাবে পয়েন্ট অনুযায়ী ভারতবর্ষে জনসংখ্যা বৃদ্ধির কারণগুলি উল্লেখ করা আছে, সুতরাং দেরি না করে নোটসটি দেখে নাও।

■ ভারতবর্ষে জনসংখ্যা বৃদ্ধির কারণগুলি হলঃ
স্বাধীন ভারতের জনসংখ্যা বৃদ্ধির হারের ব্যাখ্যায় তাত্ত্বিকগণ নিম্নরূপ কারণগুলি নির্দেশ করেছেন -

  • জন্ম ও মৃত্যু হারের মধ্যে বিস্তর ব্যবধানঃ
দেশের জনস্ফীতির অন্যতম কারণ হলো জন্ম ও মৃত্যু হারের ব্যাপক ব্যবধান। বিংশ শতকের পঞ্চাশের দশকে প্রতি হাজারে জন্মহার ছিল 40.9 এবং মৃত্যুহার ছিল 22.8। সেই সময় জনসংখ্যার স্বাভাবিক বৃদ্ধির হার ছিল 18.9। এই শতকেরই আশির  দশকে জন্মহার হ্রাস পেয়েছে 29.5 এবং মৃত্যুহার হ্রাস পেয়ে হয়েছে 9.8। এর অর্থ হল জনসংখ্যা স্বাভাবিক বৃদ্ধির হার বৃদ্ধি পেয়েছে হাজারে 19.7। অতীতে বিভিন্ন সংক্রমণ ব্যাধির প্রার্দুভাবে বহু মানুষের অকাল মৃত্যু ঘটত। কিন্তু স্বাধীন ভারতে জনস্বাস্থ‍্য পরিকল্পনা গ্রহণসূত্রে স্বাভাবিক মৃত্যুহার এবং শিশু মৃত্যুর হার যথেষ্টই হ্রাস পেয়েছে, যা জনসংখ্যা বৃদ্ধিকে তরান্বিত করছে।

  • অল্প বয়সে বিবাহঃ
আইন করে বিবাহের বয়স বাড়ানো হলেও বর্তমানে 18 বছর বয়সের আগেই অনেক মেয়ের বিবাহ হচ্ছে। আর কম বয়সের মেয়েদের বিবাহ হওয়ায় সন্তান-সন্ততির সংখ্যা বৃদ্ধি পাচ্ছে। ধর্মীয় কারণ দেখিয়ে বাল্য বিবাহ ও বহু বিবাহের ব্যবস্থা এখনও প্রচলিত আছে এবং অন্যান্য দেশের তুলনায় ভারতে অবিবাহিত ব্যক্তির সংখ্যা নিতান্তই কম।

  • দারিদ্রতাঃ
সন্তান প্রজননের ক্ষেত্রে দারিদ্রতা হল অন্যতম একটি কারণিক। দারিদ্র পরিবার গুলির কাছে সন্তানের আধিক্য পরিবারের সম্পদ হিসাবে বিবেচিত হয় - বোঝা হিসাবে নয়। এই সমস্ত পরিবারগুলির সন্তান-সন্ততি প্রতিপালনগত ব্যয়ও নিতান্তই কম। অন্যদিকে এই শিশুরা বড়ো হয়ে পরিবারের আর্থিক উদ্যোগ আয়োজনে অংশগ্রহণ করে। আবার দরিদ্র বর্গভুক্তদের বিনোদনের জন্য অধিক ব্যয়ের সামর্থ্য না থাকায় অধিকমাত্রায় যৌণ বাসনা পরিতৃপ্তির সূত্রেই প্রজনন হার বৃদ্ধি পায়।

  • নগরায়ণের ধীরগতিঃ
গ্রামাঞ্চলের তুলনায় শহর অঞ্চলের প্রজনন হার কম। শহরের জীবনযাপনের ব্যয় বেশী হওয়ার কারণে পরিবার পরিকল্পনা ও কম সন্তানের বিষয়ে সতর্কতা অবলম্বন করা হয়। অন্যদিকে গ্রামাঞ্চলে এই রূপ সমস্যা তীব‍্য না থাকার কারণে সন্তান প্রজনন হার অধিক।

  • উচ্চহারে নিরক্ষরতাঃ
বর্তমানে দেশে নিরক্ষর মানুষের সংখ্যা কমবেশি 35% এর কাছাকাছি এবং এদের মধ্যে অধিকাংশই হল মহিলা। আবার দেশের অর্থনীতি কৃষি প্রধান হওয়ায় পুত্রসন্তান লাভের বাসনা বিশেষভাবে বর্তমান। স্বামী-স্ত্রীর একজন বা উভয়েই যদি নিরক্ষর হয় তাহলে পরিকল্পিত পরিবারের সম্ভবনা থাকে না। কারণ অশিক্ষিত দম্পতিরা গোঁড়া ও ধর্মাণ্ধ হওয়ায় প্রজনন হার অধিক হয়। যে সকল রাজ্যে সাক্ষরতার হার বেশি সেখানে জন্মহার অপেক্ষাকৃত কম। প্রসঙ্গত বলা যায় ,সাক্ষরতার হার বেশি হওয়ার কারণে কেরালাতে জন্মহার কম।

  • ধর্মীয় ও সামাজিক প্রথাঃ
ভারতে বিবাহকে মূলত ধর্মীয় কারণে একটি সামাজিক প্রতিষ্ঠান হিসেবে দেখা হয়। আর বাল্যবিবাহ ও বহুবিবাহ হল তার অন্যতম ভারতীয় প্রথা। ধর্মান্ধ ও গোঁড়া লোকেরা পরিবার পরিকল্পনা পদ্ধতির অনুসরণের পক্ষপাতী নয়। অনেকে মনে করেন, সন্তান হল ঈশ্বরের দান বা আশীর্বাদ। বিশেষত মুসলমান সম্প্রদায়ের ক্ষেত্রে এই ধরণের বিশ্বাস অধিক মাত্রায় পরিলক্ষিত। ফলে পরিকল্পনার আধুনিক উপায় পদ্ধতি অনুসরণের অনীহা মানষিকতা প্রজনন হার বৃদ্ধিকে প্রভাবিত করে।

  • যৌথ পরিবার ব্যবস্থাঃ
ভারতে সাবেকী যৌথ পরিবার ব্যবস্থায় সন্তান প্রতিপালনের ব্যাপারে স্বামী স্ত্রীর তেমন কোনো দায়দায়িত্ব থাকে না। আবার পরিবার পরিকল্পনা পদ্ধতি এবং মহিলাদের বন্ধাত্বকরণ সম্পর্কে যথার্থ সঠিক ধারণা না থাকায় জনসংখ্যা বৃদ্ধি পেয়ে চলেছে।

No comments:

Post a Comment